একান্ত ভাবনা

ধরম নীতি, রাজনীতি, অরথনীতি, সমজনীতি ইত্যাদি

রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬

ভোগান্তি

খুবই সাধারণ একটি দৃশ্য
পথে ২০ মিনিটের হোটেল বিরতি সহ প্রায় পাঁচ ঘন্টার যাত্রা।
আমি যে সময়মত আমার গন্তব্যে পৌঁছাব সে ব্যপারে আমি একেবারে নিশ্চিন্ত ছিলাম। বাসে হোক বা ট্রেনেই হোক যাত্রার সময় মাঝে মাঝে আমার ঘুম ঘুম ভাব হয়। তবে সচরাচর আমি ঘুমাই না। ঘুমোতে পছন্দও করি না। আমর বরং পাশের দৃশ্যাবলী দেখতেই ভাল লাগে। আর এ কারণে আমার সিট টা যে জানালার পাশে তা নিশ্চিত হয়েই টিকিট কিনি।
যা হোক, আমার কিছুটা ঘুম পাচ্ছিল এবং ঘুমিয়েও পড়েছিলাম।
বড় একটা ব্রেক এবং সেই ব্রেকের কারণে সম্ভবত: আমাার ঘুমটা ভেংগে গিয়েছিল। আমি জেগে উঠলাম। বাস থেমে আছে।
আমি আমার হাতের ঘড়িটার দিকে তাকালাম। ৪৫ মিনিট। অর্থাৎ মিনিট ধরে আমি বাসের মধ্যে আছি।
এ পথে আমি প্রায়ই যাওয়া – আসা করি। পথ আর বাস ব্যাপারে আমার খুব  ভাল ধারণা আছে। ৪৫ মিনটের ব্যবধানে বাসটি কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে তা খুব সহজেই আমি ধারণা করতে পারি।
কিন্তু বেশ আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম বাসটি যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল প্রায় সেখানেই থেমে আছে। আর দূরত্বের কথা যদি বলতেই হয় তাহলে বলতে হবে মাত্র কয়েক হাত দূরে।
ঘটনা কি তা জানার জন্য এদিক ওদিক তাকালাম। দেখলাম শ’ শ’ নয় হাজার হাজার বিভিন্ন ধরণের যান বাহন নিশ্চল হয়ে দাঁড়িযে আছে।
আমার মনে পড়ল আমাদের ভাষায় এটাকে বলে ‘যান যট।’
এ দেশের মানুষের কাছে ‘যান যট’ এর বিষয়টি খুবই পরিচিত। কেন না প্রায় প্রায়ই তাদের এই ক্ষতিকারক যান যটের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও কষ্ট পেতে হয়।
দুশ্চিন্তা ঘনিভুত হতে থাকল, দু’ চারটে অনাহূত প্রশ্ন এসে ঘুর পাক খেতে থাকল সমস্ত মন জুরে-গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব তো নাকি . . .?
আমি যখন ভাবছিলাম তখন বাসটি আবার চলতে শুরু করে। আমি আশার আলো দেখতে পেলাম। কিন্তু বুঝতে পারি নি সেই আশার আলোটি ছিল খুব অল্প সময়ের জন্য। বাসটি আবার থেমে গেল মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায়।
বিরক্তিকর ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় পর বাসটি আবার চলতে শুরু করল। দ্রুত গতিতে বেশ ভালই চলছিল। সময়মত গন্তব্যে পৌঁছানোর যে আশা তা আবার ফিরে পেলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই আমার মেয়ের মিষ্টি মুখটা দেখতে পাব ভেবে ভিষন ভাল লাগছিল আমার।
কিন্তু ভাগ্য আমার পক্ষে ছিল না।
চালক হঠাৎ করেই চালানো বন্ধ করে দিলেন। আর আমরা সবাই লক্ষ্য করলাম - চালক, হেল্পার, কন্ডাক্টর সবাই বাসটির পিছনের দিকে ছুটছেন।
কারণ? একটু পরে জানলাম পিছনের একটি চাকা হাওয়া শূণ্য হয়ে পড়েছে।
তারা তখনই কাজে লেগে গেল এবং যতটা দ্রুত সম্ভব হাওয়া শূণ্য চাকাটি সড়িয়ে ফেলে আরেকটি চাকা লাগানো যায় সে জন্য প্রাণপন চেষ্টা করতেও লক্ষ্য করলাম। তবুও চল্রিশ মিনিটের আগে পারল না।
অশেষে বাসটি এই দীর্ঘ ও কষ্টদায়ক যাত্রা শেষ করল। আমরাও সাড়ে চার ঘন্টার স্থলে দশ বা প্রায় দশ ঘন্ট পর নিজের নিজের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম।
কিছু সময়ের জন্য হলেও সব কিছু ভুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু অনেক কষ্টের এই বাস যাত্রাটি আমাকে ছাড়ল না। ফিরে এলা আবার।
বেশ কিছুটা সময় ধরে বিষয়টা নিয়ে আমি ভাবলাম। ভাবনার ফল স্বরুপ যা পেয়েছিলাম তা আমাকে আনন্দিতই করেছিল।
অবশ্য তেমন কিছু পাইওনি। যা পেয়েছিলাম তা শুধু ধৈর্য্য।
আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই যে এতটা পথ আমি ধৈর্য্য ধারণ করেছি। এবং এটাই সত্য যে শুধুমাত্র ধৈর্য্য’র কারণেই শেষ পর্যন্ত আমি আমার গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছি। ধৈর্য্য সত্যিই ফল দায়ক।
এখান থেকে যে ভাল শিক্ষাটি আমি শিখেছি আর যা সবাই শিখতে পারে তা হচ্ছে আমরা যে পথ ধরে আমাদের আরাধ্য গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই সহজ-সরল, ছোট-খাট পথ নয়। সেটি বন্ধুর, আঁকা-বাঁকা, সমস্যা সংকুল, কাঁটা ছড়ানো পথ। এ পথে চলতে হলে ধৈর্য্য’র প্রয়োজন। সর্ব্বচ্চো ধৈর্য্য ধারণ করেই আমাদের এ পথে এগুতে হবে। আর ধৈর্য্যই একদিন আমাদেরকে আমাদের আরাধ্য গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।
শেষ বিকেলে বেড় হলাম। হাঁটতে হাঁটতে শহরের কেন্দ্রস্থল বলে পরিচিত যে জায়গাটি সেখানে যেয়ে পৌঁছালাম। প্রথমে যে জিনিসটি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল তা ছিল একটি মিছিল।  কয়েকটি নারীবাদী সংগঠন সম্মিলিতভাবে মিছিলটি বের করেছে। তাদের বহনকৃত কয়েকটি ব্যানারে লেখা পড়ে বুঝলাম জেলার কোন এক জায়গায় এক নববধুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদে এই মিছিল।
এক সাংবাদিক বন্ধুর কাছ থেকে আরও কিছু তথ্য জানলাম এবং স্পষ্টভাবে বুঝলাম এই নারীবাদী সংগঠনগুলো একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকেই মিছিলটি বের করেছে। উদ্দেশ্য একটিই সরকার তথা সর্ব স্তরের জনগণকে জানানো-হত্যা, ধর্ষণসহ সব ধরণের নারী নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
মহৎ উদ্দেশ্য।
কিন্তু …সকালের পথ, পথ পাড়ি দেওয়ার যে কষ্টকর অভিজ্ঞতা তা মনে পড়ল আর মনে হল নারীদের এই পথটাও কোন সহজ-সরল, ছোট-খাট পথ নয়। এটি বন্ধুর, আঁকা-বাঁকা, সমস্যা সংকুল, কাঁটা ছড়ানো পথ। তাদের প্রয়েজন ধৈর্য্য ধারণ করা এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে চলতে থাকা।
আমি জানি আজকের মেয়েরা আগেকার মত নয়। অনেক আলাদা। তারা আজ উচ্চ শিক্ষিতা, আধুনিক, সচেতন ও সুবুদ্ধি সম্পন্না।
আমার বিশ্বাস করতে একটুও দ্বিধা হয় না যে এই নারীরা একদিন তাদের গন্তব্যে পৌঁছাবেই পৌঁছাবে।

জীবনের জন্যই জীবন


কর্তব্যরত সেবিকা
সীমার সাথে যে আমার আবার দেখা হবে তা আমি কোন দিন কল্পনাও করতে পারিনি।

আমি যে সীমার কথা বলছি সে, আমি আমরা ২০/২৫ বছর আগে এক সাথে পড়াশুনা করতাম।

এতদিন পর আমি পুরোপুরই ওকে ভুলে গিয়েছিলাম। ওকে ঘিরে কোন স্মৃতির কথা মনে করাও ছিল দুঃসাধ্যের মত কোন বিষয়।

তবে যা আমার মনে ছিল, যা হয়তো আমি সহজেই মনে করতে পারি তা হচ্ছে ওর কমনীয় মুখ মন্ডল, মিষ্টি মিষ্টি কথা যা হাসি-আনন্দে বা সুখে-দুঃখে সব সময় বলত। আর ওর বন্ধু সূলভ আচরণ বিনম্র ব্যবহার।

কেন জানি আজও আমার বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় সীমা এই সমস্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো উপরিস্থিত স্বর্গ ভান্ডার থেকেই লাভ করেছিল।


সব ছাত্র-ছাত্রীরা ওকে খুব পছন্দ করত। শিক্ষকরাও খুবই ভালবাসতেন ওকে।

ওর জন্মটাও ছিল আশির্বাদ স্বরুপ। কেন না ওর মা-বাবা উভয়ই শিক্ষিত ছিলেন। এমন এক সময়ে শিক্ষিত ছিলেন যখন সমগ্র জনগোষ্ঠির ৯৫ শতাংশই ছিল অশিক্ষিত।

তারা অতি ধনীও ছিলেন না আবার অতি গরীবও ছিলেন না। ভদ্রোচিতভাবে জীবন যাপনের জন্য যা থাকা দরকার তার প্রায় সবই ছিল-নিজের বাড়ি ছিল, চাষ যোগ্য কিছু জমি ছিল আর ছিল প্রয়োজনীয় টাকা পয়সা।

এমন কোন প্রমাণ নেই যে সীমার বাবা কখনও কিছু টাকা চেয়ে কারও কাছে হাত পেতেছিলেন।  কিন্তু অন্যদের সাহায্য করার মত তার যে একটা উপকারী মন ছিল তা প্রমাণ করতে পারে এমন অনেক লোক এখনও জীবিত আছেন।

উপকারের বিনিময়ে তিনি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন নি ঠিকই তবে সবার কাছে তিনি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এক সময় এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন যে আশেপাশের সাধারণ জনগণ তাকে রাজনৈতিক কোন নেতার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেনা করতে শুরু করেছিল। কারণেই তাকে এবং তার পুরো পরিবারকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের এক প্রভাবশালী ক্ষমতাশালী নেতার রোষানলে পড়তে হয়েছিল। এই নেতা তাকে তার পথের কাঁটা হিসেবে ধরেও নিয়েছিল আর তাকে যেকোন উপায়ে নিশ্চিহৃ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। উদ্দেশ্যে সেই নেতা সবকিছু করেছিল কিন্তু নিশ্চিহৃ হওয়ার আগেই সীমার বাবা তা বুঝতে পেরেছিলেন এবং যত দ্রুত সম্ভব পরিবার সহ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জন্য খুব বেশি সময়ও নেননি তিনি। হঠাৎ করেই একদিন পরিবার নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেন। কেউ জানত না কোথায়। হয়তো বা কোন শহরে। এমন ধারণাই করেছিল সবাই।

গ্রাম ছাড়ার পর থেকে সীমাকে আর কোন দিনও এলাকার কোথাও দেখিনি।

অবশ্য আমিও জীবনের শুরুতেই গ্রাম ছেড়েছি। তারপর থেকেই বিভিন্ন শহরে, নগরে, বন্দরে আছি। কিন্তু সীমাকে আর দেখিনি কোথাও।

একদিন আমার এক বন্ধুকে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় মারাত্বকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। ওর স্ত্রীর কাছ থেকে খবরটি প্রথম শুনে কি করব আর কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না। শেষে হাসপাতালে ছুটে গেলাম।

পৌঁছার আগেই বন্ধুকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। সেই মূহুর্তের অবস্থা কি তা জানার জন্য ওর স্ত্রীর সাথে কথা বলছিলাম। বা মিনিটের মধ্যেই দেখলাম একজন সেবিকা আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। কাছাকাছি আসতেই প্রশ্ন করল, “হাই, তুমি কি আমাকে চিনতে পারছ না?”

না তো! একদমই না। দুঃখিত। আমি উত্তর দিলাম

আমি সীমা, সেই সীমা যার সংগে তুমি পড়াশুনা করতে। এখন আমি এই হাসপাতালের একজন সেবিকা।সীমা বল্ল।

আমি চিনলাম এবং কথা বলা শুরু করলাম।

কিছুক্ষণ পর সীমা ওর হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে নিয়ে আমাকে অপেক্ষা করতে বা ওকে অনুসরণ করতে বল্ল। কারণ তখন এক নবজাতক শিশুর মাকে দেখতে যেতে চাচ্ছিল। সেই মা প্রথম বারের মত এক ছেলে সন্তানকে জন্ম দিয়ে তখন ভীষন অসুস্থ্য।

সীমা অতি উৎসাহের সাথে জানাল নবজাতক শিশুটির মা ওই একই গ্রাম থেকে এসেছে যে গ্রামে একদিন অন্যান্যদের মতই সীমা আমিও জন্ম নিয়েছিলাম এবং কৈশর পর্যন্ত থেকেছিলাম।

জানতে অস্থির হয়ে অতি আগ্রহে প্রশ্ন করলামকে সে”?

বলছি, এস আমার সাথে।

আমি ওর সংগে সংগে যেতে লাগলাম।

একেবারে দক্ষিণের বিশেষ একটি কেবিনে ছিল রুগিটি। হেঁটে গেলে মাত্র তিন মিনিটের দূরুত্ব।

বেহুশ হয়ে পড়ে আছে রুগিটি আশে পাশে বিভিন্ন নামের আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অসংখ্য ওষুধ। আমি সহজেই বুঝতে পারলাম ভীষন অসুস্থ্য সে। কিন্তু চিনতে পারলাম না।

কে সে”? আবারও প্রশ্ন করলাম আমি

সীমা বলতে শুরু করল কিন্তু শেষ করতে পারল না। তার আগেই আমি বুঝতে পারলাম মহিলাটি সেই নেতার ছেলের বউ যে সীমা এবং তার পরিবারকে এক দিন গ্রাম ছাড়া হতে বাধ্য করেছিল।

সীমা, তুমি জান …”?

সীমা সাথে সাথেই বলে উঠল, “হ্যাঁ, জানি। স্মৃতিতে সবই আছে। রাগ, ক্রোধ, ক্ষোভ এখনও জ্বালায়। প্রতিশোধের আগুন রাত, দিন সব সময় তাড়িত করে। সময় এখন আমার হাতে।  ইচ্ছে করলেই আমি প্রতিশোধ নিতে পারি। মা সন্তান উভয়কেই শেষ করে দিতে পারি। কিন্তু আমি একজন মেয়ে আর একজন সেবিকা। বিশ্বের সকল মেয়েদের মত, সকল সেবিকাদের মত আমিও বিশ্বাস করি জীবনের জন্যই জীবন কিন্তু মৃত্যুর জন্য নয়।

আরও কিছু বলবার আগে বাইবেলের মথি পুস্তকের ৫:৪৪ পদে লিখিত পদটি হুবহু মনে পড়ে গেল। এখানে লেখা আছে, “ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের শত্রুদেরও ভালবাসো। যারা তোমাদের প্রতি নির্যাতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো।”

এটি শিক্ষা না কি নিদের্শনা বিষয়টি বড় নয়। বড় বিষয়টি হচ্ছে প্রভূ যীশু খ্রিস্ট নিজেই তার শিষ্য বা অনুসারীদের এটি করতে বলেছেন। কিন্তু এটা বলতেই হয় খ্রিস্ট ভক্ত কোন মানুষের জীবনেও এই শিক্ষার তেমন একটা প্রতিফলণ আমি দেখেছি বলে আমার মনে পড়ে না।

সীমা হিন্দু ধমের্র অনুসারী বলেই আমি জানতাম। তবে আজ ও কোন ধর্ম পালণ করে আমি জানি না। আর তা জানাটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে শত্রুকে যে সত্যি সত্যিই ভালবাসা যায় এবং কিভাবে শত্রুকে ভালবাসা যায় সীমা নিজেই তার জীবন্ত ও জ্বলন্ত উদাহরণ।